Personal Blog | Travel | Tech

বিদেশের মাটিতে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা

বিদেশের মাটিতে প্রথম সাইকেল চালিয়েছি আজকে। দেশের বর্ডার পার হলাম আজকেই।
এসেছি পাশের দেশ ভারতে। সাইকেল চালাতে আসলেও এখানে এসে অনেক কিছু শিখেছি। রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়াতে RHD ইন্ডিয়া অনেক রকমের কিছু মূল্যবান কথা লিখেছে বিশাল অক্ষরে। আমি ঢাকায় গেলে প্রতি নিয়ত শেয়ার দিবো ইনশাআল্লাহ। 😊
এদের রাস্তার কাজ চলছে জলপাইগুড়ি র পরে থেকে একদম মাদারিহাট পর্যন্ত। যেই যেই অংশে কাজ চলছে তার ১০০ মিটার আগে থেকেই লিখে দিয়েছে Caution, Men at work সহ আরো অনেক রকমের সতর্কবাণী।
আমি হাইওয়ে তে সাইক্লিং করায় দেখেছি ৯৯% মোটরসাইকেলের নাম্বার প্লেট ডিজিটাল। অর্থাৎ আমাদের দেশের মতই সাদা প্ল্যাটের মাঝে কালো খোদাই করা নাম্বার। হ্যা আমরা দাদাদের থেকেই শিখেছি এবং সরকার তা কার্যকর করেছে। ✌
যত মোটরসাইকেল দেখলাম সব কি অভাগা নাগরিকদের? নাকি আমাদের দেশের ডিজিটাল ভিক্ষুকদের মত ও আছে যারা নিজেদের গাড়িতে সাংঘাতিক, চোর-পুলিশ,অমুকের হালা-হালি সাইনবোর্ড টাঙাইয়া রাখে?
ভারতের মানুষদের গালি দিছি আমি নিজেও। কিন্তু তাদের খারাপ টা না শিখে আসুন না ভালো টা শিখি???
বর্ডারে তাদের কথা শুনলে লজ্জা লাগে যে ঠিক ঐ পারে আমার ভাইয়েরা আমার সাথে কি ব্যবহার টা ই না করলো!!!
সাইকেল চালাতে গেলে প্রতি ১০/১৫ কিলোমিটার পর পর থেমেছি। কথা হয়েছে অনেকের সাথে। দেশে ও তো এমনই থেমেছিলাম। তফাৎ ও খুজে পেয়েছি। তারা সাইকেলের গিয়ার টিপাটিপি করেনা। ন্যাগলেক্ট করেনা, গাড়িতে আইসা কন সাইকেলে আইছেন অথবা মইরা গেলেও সম্ভব না সাইকেলে ব্লা ব্লা ব্লা।
তাদের এমন অতিথিপরায়ণতা দেখে সাহস হয়েছে ইন্ডিয়ার ভেতরেই রাতে সাইকেল চালিয়ে জয়গাও বর্ডার যাবো।
মাদারীহাটের চেকপোস্ট এ পুলিশ আমাকে জঙলের কথা বলে নিষেধ করে। শুনিনা বিধায় থানায়(পাশেই) কর্তব্যরত এস আই এর কাছে নিলেন। ওসি আদাব জানিয়ে ফ্ল্যাগ দেখেইই বললেন বাংলাদেশের কোথায় বাড়ি?
চা খাওয়াওতে চাইলেন। মানা করলাম।
যেহেতু আপনি নাছোড়বান্দা সাইকেলে যাবেনই সেহেতু আমার টিম আপনাকে হাসিমারা স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাক।
বললাম, এখনো অন্ধকার হয়নি, মাত্র ৭ কিলোমিটার চলে যেতে পারবো স্পীডেই। তারপর থেমে লাইট লাগাবো। বিদায় দিলেন খুব খাতির করেই।
সেই জঙলের কারণে এতো স্পীডে সাইকেল চালিয়েছিলাম যে Altitude ৪৫ থেকে ৯০/৯৫ উঠে গেছি টেরই পাইনি।
যাইহোক, অন্যকে গালি দেওয়ার আগে তার ভালো দিকগুলো নিজের কাছে আছে কিনা চেক করে নিন। অথবা নিজেকে সংশোধন করুন।
রাতের অন্ধকারে আর্মি আটকিয়ে হিন্দিতে কথা বলে কি জিগায় বুঝিনা। বললাম, হিন্দি নেহি মালুম। বাংলা অর ইংলিশ। অন্যজকে ডাক দিলেন যে বাংলা বুঝে। চেকপোস্ট এ বসতে বললেন। জিজ্ঞেস করে পাসপোর্ট চেক করলো। তারপর হাসিমুখে বিদায় এবং শুভকামনা ও জানালেন।
বুড়িমারি তে আমার ভাইয়েরা সাইকেল আটকাতে চায়। শেষে তর্কে না পেরে বলে বিএসএফ নিতে দিলে নিয়ে যান। বিএসএফ সাইকেল দেখে সাইকেলওয়ালার প্রশংসায় বিজি আর গিয়ার গূনে। তারা তো মানা করার প্রশ্নই আসেনা। আসার সময় মেইন বিএসএফ শুভকামনা জানান।
কত পার্থক্য আমাদের এবার বুঝুন।
যাইহোক সফর শুধু বিনোদন নয়। শিক্ষার একটি অংশ। কাল ইনশাআল্লাহ ভুটান ঢুকবো। শুনেছি তারা খুবই ভদ্র। আশা করি ঐ রকমই আচরণ পাবো ইনশাআল্লাহ। 😊
Spread the love

Leave a Comment