Personal Blog | Travel | Tech

সাইকেলে সীমান্ত অতিক্রম | কিভাবে করবেন । ভিডিও সহ

বর্ডার পার হয়ে পশ্চিমবঙ্গের গেটে আমি আর আমার সাইকেল
অনেক সাইক্লিষ্ঠ
ভাই-ব্রাদারদের অনুরোধের কারণ একটা পোষ্ট লিখেই সবাইকে অবগত করছি যারা ইন্ডিয়ায়
সাইকেলে যেতে চান।
অনেক কমেন্ট,পোস্ট
এ ম্যানশন করার কারণে আলাদা আলাদা জায়গায় বারবার একই কমেন্ট করা আসলেই সম্ভব না।
তাই এখানে লিখলাম একসাথে। কারো সামান্য উপকারে আসলে আমার লেখা এবং সাইকেলে ভারতে
প্রবেশ স্বার্থক হবে।
😊



চেংরাবান্ধা বর্ডারের ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে
বর্ডার পাড় হওয়ার আগে বুড়িমারি জিরো পয়েন্ট এ

জয়গাঁও-ফুয়েন্টশলিং বর্ডারে ভুটান প্রবেশের জন্য ভারতীয় ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে

সাইক্লিং শুরু করে
স্বাভাবিক নিয়ম মেনে আমরা নিজ এলাকা থেকে নিজ উপজেলা
,জেলা
এবং দেশ ঘোরার মন-মানসিকতা নিয়ে পর্যটনের একটা বড় অংশ হয়ে যাচ্ছি। ঘুরছি জেলা থেকে
জেলা
, বিভাগ থেকে বিভাগ হয়ে পার্বত্য অঞ্চলেও কম
যাচ্ছিনা। দেশের আকর্ষনীয় পর্যটন এলাকায় এখন যেকোন সময় গেলেই কোন না কোন
সাইক্লিষ্ঠকে আপনার চোখে পড়বে।
 😊

কেউ কেউ সাইকেল চালিয়ে
যেতে চাচ্ছেন দেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পার্শ্ববর্তী কোন দেশে। সে ক্ষেত্রে আমার
দেখা এবং শোনা মতে পাশের দেশ ভারত
,নেপাল,ভুটানেও অনেকে সাইকেল চালিয়েছেন। কিন্তু সেটা সাইকেল চালিয়ে প্রবেশ করে
নয়। হয় বিমানে
, ট্রেনে বা বাসে সাইকেল প্যাক করে নিয়ে
তারপর অন্য দেশে সাইকেল চালিয়েছেন। 


যতটা শুনেছি তাতে আমি
এতটুকুই বলতে পারি বিডিসি
র গুটি কয়েক সিনিয়র সাইক্লিষ্ঠ ছাড়া সম্ভবত সাইকেল চালিয়ে ভারতের কোন
বর্ডার পার হননি আর কেউ। আমার জানামতে যারা বর্ডার ক্রস করেছেন তারা হচ্ছেন
Anindo
Zaman ভাই, Jeremy Tiash ভাই সহ ঊনাদের
সাথের কয়েকজন। গত সপ্তাহে সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটি
র ৪ জন
তামাবিল-ডাঊকি বর্ডার ক্রস করেন। গত কোরবানির ঈদের ৩য় দিন আমি
বুড়িমারি-চেংরাবান্ধা বর্ডার ক্রস করি সাইকেল চালিয়ে।
সামান্য কিছু নিয়ম
মাফিক আচরন এবং সামান্য বেয়াদবি(!) আচরন না হলেই নয় যদি সাইকেলে বর্ডার ক্রস করতেই
চাই। আমি আপনাকে কখনই উপদেশ দিবোনা বর্ডারে যেয়ে কারো সাথেই বেয়াদবি করুন। বেয়াদবি
র কথা কেন বলছি
?
আমার মতে, সিনিয়র কারো সাথে তর্কে জড়ানো
মানেই বেয়াদবি। সেই ক্ষেত্রে কাস্টম/শুল্ক অফিসার এবং বিজিবি সদস্য রা আমার থেকে
অবশ্যই সিনিয়র এবং পারতপক্ষে অনেক অভিজ্ঞ। তবে আমার দেশের শুল্ক কর্মকর্তা
,কাস্টমস কর্মকর্তা বা বিজিবি সদস্য রা (সবাই না) এই সাইকেলের ব্যাপারে
সঠিক কোন নিয়ম বা আইন জানেন না (বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি)। তারা মনে করেন
মোটরসাইকেলের মতই এই বাইসাইকেলের ও ডকুমেন্ট আছে(বর্ডার ক্রস করার ব্যাপারে)। আমি
স্বাভাবিকভাবেই বুড়িমারি স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে ফর্ম পূরন করে ঠিক ঠাক জমা দিয়ে
সাইকেল সহ বিজিবি চেক পোস্টে অন্যান্যদের সাথে লাইনে দাড়াই পাশের বুড়িমারি শূন্য
কিলোমিটার মাইলস্টনের সাথে সাইকেল রেখে। যেখানে রাখলে বিজিবি পোস্ট থেকে স্পস্ট
চোখে পড়ে। বিজিবি খাতায় এন্ট্রি দিতে গেলে বিজিবি
র মেইন
যিনি ছিলেন সেই মুরুব্বির সাথে আমার কথোপকথন
আপনার
টিটি (ট্রাভেল টেক্স) র কাগজ টা দিন।
দিয়েই
আমি নিজ ইচ্ছায় বলি আমার সাথে সাইকেল আছে। আমি সাইকেলে ইন্ডিয়া যাবো ট্রাঞ্জিট
ভিসায় ভুটান ভ্রমনের জন্য।
কপাল
কুছকে বললেন
, সাইকেলে যাবেন? (অর্থাৎ
তিনি আশ্চর্য এবং কিউরিয়াস)
হ্যা,
আমি সাইকেলে যাচ্ছি
তাহলে
আমাদের শুল্ক বিভাগে গেলে সেখানে জানাবেন। তারা আপনাকে যেতে দিবে কিনা দেখেন।
আমি চেংরাবান্ধা
বর্ডারের কাছে গেলাম সাইকেল চালিয়ে অন্যদের সাথে। বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে শুল্ক
বিভাগে ঢুকলাম বাংলাদেশের গেটে সাইকেল টা হেলান দিয়ে। :
P
শুল্ক বিভাগে গেলে নাম
ধরে ডাকে আমাকে
আপনার
সাথে কি কি আছে
?
আমার
ব্যাগ এবং অন্যান্য জিনিস এর সাথে সাইকেল ও নিচ্ছি
কপাল
কুছকে বলেন
, সাইকেল? সাইকেলের
কাগজ দেখান
সাইকেলের
কাগজ হয় কোন দেশের আইনে আছে কিনা
?
সাইকেল
নিয়ে তো যেতে পারবেন না আপনি
সাইকেল
কি অবৈধ জিনিস
? এটা একটা অযান্ত্রিক বাহন। কেন আমি সাইকেল
নিতে পারবোনা
? কারণ দেখান। কোন আইন থাকলে বৈধ প্যাচে
আটকান। আর যদি না ই যেতে দেন সেটা ভিন্ন কথা।
গোপ্রো আমার বুকে
লাগানো থাকলেও আমি অন করিনি। কিন্তু তর্ক যখন গাড়ো হচ্ছে তখন রেকর্ডিং অন করায়
সেদিকে এই শুল্ক কর্মকর্তার চোখ যায়। তিনি সেটা কি জিজ্ঞেস করায় বলেছি এটা
ক্যামেরা। রেকর্ডিং হচ্ছে…

ভিডিও টি পোষ্টের শেষে দেওয়া হয়েছে। অথবা সরাসরি ইউটিউবে দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন। 

তিনি আমাকে তৎক্ষণাৎ
পাশের চেয়ারে বসা কর্মকর্তার সাথে কানে ফিসফিস করে জানালেন
, ঠিক
আছে আপনি যান। যদি আপনাকে বিএসএফ যেতে দেয় তবে যেতে পারেন।
আমি উত্তর দিলাম, আমার
দেশের কোন আইনে আছে কিনা সাইকেলে যেতে পারবোনা
? থাকলে
দেখান। আমি আমার দেশের আইন ভঙ্গ করে অন্যদের দ্বারস্থ হবোনা। ততক্ষনে আসেপাশের
লোকজন আমার পক্ষে সাফাই গাইছেন। ঠিক এই সময় শুল্ক কর্মকর্তার উত্তর আসছে
, না ঠিক আছে। আপনি যেতে পারেন। কোন আইনি বাঁধা নেই। আমি ধন্যবাদ দিয়ে
বের হয়ে ইন্ডিয়ান বর্ডারের দিকে এগিয়ে গেলাম সাইকেল সহ।

এবার আসি বিএসএফ এর
কথায়


উনারা আমার সাইকেল
দেখেই কয় গিয়ার
,
কোথায় যাই, কিভাবে এতো লম্বা সময় চালাবো
এইসপব প্রশ্নবানে বিজি। তবে খুবই হাশিখুশি আমাকে তারা গ্রহন করেছেন। জিজ্ঞেস করলাম
,
সাইকেল বিষয়ে কোন সমস্যা আছে কিনা? উত্তর
দিলেন
, না না দাদা। আপনি যেতে পারেন। তবে শুল্ক ঘরে
দেখিয়ে যান।
গেলাম শুল্ক ঘরে।
সেখানে একটা ফর্ম পূরন করতে হয়েছে যেখানে উল্লেখ থাকবে আমি কি কি জিনিস আমার সঙ্গে
নিচ্ছি। এবং অঙ্গীকারাবদ্ধ যে এগুলো নিয়েই আমি আবার বর্ডার পাস করবো। সেখানে বলেও
দিয়েছে যে কোন জিনিস না আনতে পারলে সেটার জন্য জরিমানা গুনতে হবে অথবা হারিয়ে গেলে
যেকোন থানার জিডি কপি জমা দিতে হবে।
ব্যাস ঝামেলা শেষ। আমি
এখন ইমিগ্রেশনে গেলাম এবং সব কাজ শেষ করে জয়গাও বর্ডারের দিকে রওনা হলাম।
সকলে এটা ও জানেন যে
সাইকেল একটা অযান্ত্রিক বাহন। আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন নিয়ম অনুযায়ি বৈধভাবে আপনি এই
সাইকেল কে একটা সাধারন লাগেজের মতই যেকোন বর্ডারে বা বিমানে বহন করতে পারবেন। যদি
আপনার জন্য ধার্যকৃত মোট ওজনের ভেতরে থাকে।
তবে অবশ্যই সেটা শুল্ক
কর্মকর্তাদের কাছে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে(পোর্ট ভেদে ভিন্নতর)। যেন ফেরার সময় একই
জিনিস আপনি সীমান্ত দিয়ে বাহির করে নিজ দেশে আনতে পারেন। অনেকাংশে সাইকেল যদি ফেরত
না আনেন তবে আপনাকে শুল্ক আইনে জরিমানা গুনতে হবে সাইকেলের দাম অনুযায়ি।


এই অংশে কোথাও কোন ভুল
থাকলে সংশোধন করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ রইলো।


তাই সাইকেলে বর্ডার পাস
করার জন্য আলাদা কোন কাগজ বা অনুমোদন লাগেনা। যে কেউ চাইলেই শুধু পাশের দেশ ভারত নয়, অন্য যেকোন দেশেই সাইক্লিং করতে পারেন।



আমার ফেসবুক প্রোফাইল ভিজিট করলে দেখতে পারবেন আমি সাইকেলে কতবার ভারত সফরে গিয়েছি। 

সবার জন্য শুভকামনা 👏👏👏

সাইকেল নিয়ে কিভাবে বর্ডার পাস করেছি তার ভিডিও রয়েছে এখানে

পোষ্ট টি ভালো লাগলে বা উপকারি মনে হলে অবশ্যই শেয়ার দিবেন। কোন কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করবেন। ধন্যবাদ।😊

Spread the love

Leave a Comment