Personal Blog | Travel | Tech

আমার বন্ধু | পুডপান্ডা ডেলিভারি বয়

আমার আজকের ডিনারের ডেলিভারি বয় বন্ধু রকি। আমার বাল্যবন্ধু, ক্লাসমেট, স্কুল ফাকিবাজ দলের গুরত্বপূর্ণ সদস্য। ❤️
প্রায় ১২/১৩ বছর পরে দেখা আমাদের।


ক্লাস সিক্স থেকে স্কুলের শেষ পর্যন্ত যারাই ঘনিষ্ঠ ছিলাম এদের প্রায় সবাই রকির বাসায় সারাদিন হুলুস্থুল আড্ডায় মেতে থাকতাম ক্লাস ফাকি দিয়ে। স্কুল পালিয়ে বাহিরে কোথাও গেলে তো আর স্কুল ড্রেস পড়ে যাওয়া যাবেনা। ঘনিষ্ঠদের মাঝে কেউ নেই যে কিনা ওর আলমিরা থেকে জামা-কাপড় না নিয়ে গায়ে দেয়নি। যে যা পড়েছিলো অনেকেই ফেরত দিতোনা। আমিও দেইনি, এমন নজির আছে। 🤭 স্কুল ফাকি দিয়ে ঢাকায় যেতাম সবাই মিলে ওর নোয়াহ গাড়ি দিয়ে। বিকেলে ক্লাস শেষ হওয়ার আগে আগেই এসে ওর বাসায় রেখে যাওয়া স্কুল ড্রেস পড়ে কত শত দিন বাসায় ফিরেছি হিসেব নেই।
বন্ধু আমার কেমন পরিবারের ছিল এটা হয়তো আর বলার দরকার নেই।
আমার বিয়ের(ভাগলপুরের) কাবিন এর সময় যখন শূন্য হাতে ছিলাম এই বন্ধুই এগিয়ে এসেছিলো। আমাকে কিছু টাকা ধার দিয়েছিলো কাজি অফিসের কাজ টা সারার জন্য। এই কথা আমি জীবনেও ভুলবোনা।
আলহামদুলিল্লাহ, উপকারীর কথা ভুলে যাওয়ার মত মানুষ আমি নই।

আমাদের সমাজে প্রতিটি পরিবারের হিস্ট্রি আলাদা এবং কারো কারো আবার বর্ণনার মতো নয়। তাই আমিও ওর পরিবারের বিষয়ে না বলে, আমাদের বন্ধুত্বের বিষয়েই বলছি। আমাদের মাঝে কত মারামারি, ঝগড়াঝাটি, গালাগালির সম্পর্ক ছিলো এটা বলে শেষ করার মত না।

কিন্তু বর্তমানে নিজেদের জীবন যুদ্ধের মাঝপথে এসে এমন একজন বন্ধুর হাতে ফুড ডেলিভারি নেওয়া কতটা ইমোশনাল মুহুর্ত ছিলো এটা হয়তো বলার অপেক্ষা রাখেনা।

আজকে আমি ওকে এই স্টেজে দেখে অনেক কিছুই চিন্তা করতেছি। ওর হিস্ট্রি ঘাটলে শিখার আছে অনেক কিছুই। অনেক কাছের বন্ধুরা মনে করবে, ওকে নিয়ে লেখার কি আছে রে ব্যাটা?
তাদের জন্য উত্তর, এমন অহংকার ওর বা ওর পরিবারের ও ছিলো এক সময়। 😞

অর্ডার করা খাবার টা হাতে নিয়ে একটা দোকানে ঢুকে বললাম, বন্ধু কি খাবি বল। ও ঠান্ডা খায়না। সিগারেট খাবে। কিন্তু যখনই শুনছে, আমি সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি তখনই বললো, আমিও খাবোনা এখন।

সব বন্ধুদের জন্য দোয়া রইলো। আমার জন্য ও দোয়া করিস।

Spread the love

Leave a Comment