Personal Blog | Travel | Tech

ভারতীয় মুসলিম পরিবারে এক রাত | আসাম রাজ্য

ভারতের তিনটি রাজ্যে সাইকেল ট্যুরের একটি অসাধারণ দিনের গল্প লিখেছিলাম একজন ভারতীয় পুলিশ কর্মকর্তার গূণের বর্ণনাসহ।
পরের অংশ, কি খেয়েছিলাম সেদিন ডিনারে বা রাতে কিভাবে ঘুমিয়েছিলাম? এই নিয়ে লেখার কথা থাকলেও আড়াই বছর পরে আসামের ১৯ লাখ মানুষ আসার আগমনী (গুজব ও হতে পারে) বার্তা পেয়ে এই ঘটনা আজকে লিখছি।
আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে এখানে পৌছাতে ভৌতিক ঘটনার মুখোমুখি হই আমরা। সেদিন (আমার বাম পাশে) কামাল নামের এই ভাইয়ের বাসায় উঠেছিলাম। তিনি অমায়িক মনের মানুষ। মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। ছোটখাটো ব্যবসা করেন স্ট্রিট ফুডের। আমরা হঠাৎই উনার বাড়িতে উঠে পড়ি। প্রচন্ড ঠান্ডার সেই রাতে উপস্থিত দুইজন বিদেশিকে কি খাওয়াবেন সেই চিন্তায় অস্থির থাকলেও আমরা বিশেষ কিছু আয়োজনের জন্য মানা করি। যা আছে তা দিয়েই খেতে বসি। কিন্তু তিনি ছিলেন লজ্জিত। ছবি উঠাতে গেলে বলেন, মনে রাখার জন্য তুলেন। কিন্তু কাউকে বলার জন্য না। অর্থাৎ উনার চিন্তায় ছিলো, আমরা না জানি বদনাম করবো। আসলে, উনাকে বুঝিয়েছিলাম আমরা আদৌ সেই ধরনের মানুষ নই।
স্টিলের প্লেটে আমাকে দিচ্ছেন না, কাঁচের প্লেট শর্ট থাকায়। আমি নিজেই টেনে নিয়ে নিলাম আমার জন্য। কারণ বাসায় আমি এখনো স্টিলের প্লেটে ভাত খাই। 😁
ভাত এর সাথে শাক ছিলো, কাচকি মাছ, আলুর তরকা, ডাল আর ভারতীয়দের প্রিয় চিপ্স ও পেয়াজ এর সাথে কাচা মরিচ। 💝
ভাত খাওয়ার সময় লোকটার কথা শুনে নিজেদেরকে ওতোটাই ভাগ্যবান লাগছে যে, আল্লাহ আমাদের আজকের রিজিক টা কোথায় ছিলো কখনো তো কল্পনায় ও আসেনি। সেই খাবারের স্বাদ ছিল অসাধারণ।
খাবারের পরে ও কামাল ভাইয়ের ক্ষমা প্রার্থনা ছিলো অনাকাঙ্ক্ষিত যে, আমাদেরকে ভালো মত খাওয়াতে পারেন নি। 😔
রাতে আমরা একটা ঘরে শুয়েছিলাম যেখানে অনেক অপ্রয়োজনীয় জিনিস ছিল। সেই ঘরে মূলত উনার ছোট ভাই দূর থেকে(লোকেশন মনে নেই) এসে থাকতেন। আমাদের জন্য এক্সট্রা কম্বল এর ব্যবস্থা করেছিলেন।
সকালে চলে যাবো শুনে রিকোয়েস্ট করেছেন একদিন থেকে তারপর যেনো যাই। ☺
লেখায় ভাষায় হয়তো বুঝা যাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত আদর যত্ন করেছেন। আসলে সেটাই যা লিখছি…
আপনাকে ভুলবোনা ভাই ❤

কামরুখ বা গুয়াহাটি আসার সময় যেখানেই থেমেছিলাম সেখানে ময়মনসিংহ বিভাগের অনেকের সাথে দেখা হয়। 🇧🇩 পতাকা দেখেই দৌড়ে এসে নিজের বাপ-দাদার 🇧🇩পরিচয় দিতে দেরি করেন নি। জানতে পারি অনেক পরিবার আছে উনাদের মত। এক শিক্ষক পরিবার তো পারেনা কোলে করে বাড়িতে নিয়ে যায়। উনার পূর্ব পুরুষের ভিটা ছিলো ভালুকায়। 😃
আজকের খবরে সেই ১৯ লাখ মানুষগুলো হতে পারে এরাই। যাইহোক, তকদীরে তাদের ঠিকানা যেখানে লিখা আছে সেখানেই যাবে।
কিন্তু মানুষ হিসেবে কিছু অতি মানবদের সাথে এই ট্যুরে দেখা হয়ে গিয়েছিলো আমাদের।
ছবিতে আমার ডান পাশে সেই ট্যুরের কো-রাইডার ও সদ্য বিবাহিত মিঃ ট্রাক Ahsanul ভাই। 😁
ছবিটি তুলেছেন কামাল ভাইয়ের ছোট ছেলে। ❤
এই ট্যুরে আমরা পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়া এই তিনটি রাজ্যের প্রায় ১১ জেলা ঘুরে আসি। সাইকেলে চালিয়ে উঠি শিলং এর সর্বোচ্চ গ্রাম পোমনাখরায়। 🚵
আরো বিস্তারিত জানতে এই এলবামের সব ছবির ক্যাপশনগুলো পড়তে পারেন। ☺
Spread the love

Leave a Comment