Personal Blog | Travel | Tech

সাজেক ভ্যালী সাইক্লিং ট্রিপ

সাজেক ভ্যালী
নামটা শুনলেই কেমন যেনো মেঘ ছোঁয়ার স্বাদ জাগে। কিছুক্ষন মেঘের উপরে নিজেকে দেখার ইচ্ছে হয়। ^_^
#TOB গ্রুপে সাজেকের ছবি দেখতে দেখতে দারুণ বিরক্ত। কারণ আঙুর ফল টক যে। 😛
মোটামুটি ভালো কিছু হিল ট্র্যাক শেষ করে দিয়েছি সাইকেলে। শুধু বাকি এই সাজেক। অনেক আগের প্ল্যান থাকলেও হুট করে পূজার ছুটি টা কাজে লাগানোর চিন্তা মাথায় আসে। 😀

সাইকেল টা অনেক দিন নষ্ট পরে আছে। ঠিক করানো হয়না আলসেমীর কারণে। সাজেকের উচিলায় হুট হাট সিসি তে নিয়ে যেয়ে ঠিক করে আনলাম। প্ল্যান ছিলো ৩ দিনের। রাতের বারৈয়ারহাট, দিনে খাগড়াছড়ি সাইকেলে, পরেরদিন সাজেক। তারপরের দিন ফেরত আসা খাগড়াছড়ি। এবং গাড়িতে ঢাকায় এসে পরের দিন থেকে কামলা খাটা শুরু আবার। :3

কিন্তু বাসের টিকেট তো ছেলের হাতের মোয়া নয়। মেনেজ করতে যেয়ে পুরাই টাস্কিত আমি। ২২শে অক্টোবর সারাদিন খুজেও কোন টিকেট না পেয়ে প্ল্যান টা চেঞ্জ করে ২ দিনের প্ল্যানে নিয়ে আসি। সেদিন বৃহস্পতিবার রাতেই শান্তি পরিবহনের বাসের একটি টিকেট পাই এবং সোজা খাগড়াছড়ি এসে নামি ভোর ৬ টায়।

শুক্রবার নাস্তা করেই সাজেকের পথে প্যাডেলিং শুরু।

সাইক্লিং করলে রাস্তায় যেখানে খুশি থেমে থেমে ছবি তোলা আরম্ভ হল কিছুদুর যেতেই।

নয় মেইল নামক জায়গায় যেতেই একটা সাইক্লিং গ্রুপ “চাকা অলা” র সাথে দেখা হলে উনাদের সাথেই দিঘিনালা পর্যন্ত এসে নাস্তার ব্রেক দেওয়া হয়। আমাকে যথেষ্ট সমাদর করেন চাকা অলা সদস্যগন। সেখানে থেকে রাইড স্টার্ট করি একাই। উনাদের জানিয়ে প্যাডেলিং শুরু করি সাজেকের পথে।

এতক্ষন তো মোটামুটি মানের আপহিল ডাউনহিল ছিল দীঘিনালা পর্যন্ত। এবার তো শুরু হচ্ছে মাশাআল্লাহ…
মানুষ অবাক নয়নে তাকিয়ে আমার দিকে, সাজেক যাচ্ছেন সাইকেলে? সেখানে তো খাঁড়া পাহাড় আছে। কিভাবে উঠবেন?
উত্তর দিলাম, আগে তো যেয়ে দেখি। ইনশাআল্লাহ্‌ উঠে যাবো। (y)

দীঘিনালা থেকে ২ কিঃমিঃ এর মত এগোলেই প্রথম আর্মি চেকপোস্ট আমাকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন বিস্তারিত। সেই প্রশ্ন, পারবেন তো সাজেকে উঠতে? সাবলীলভাবে উত্তর দিলাম, ইনশাআল্লাহ্‌।

তার থেকে আরো কয়েক কিলোমিটার এগোলেই বাঘাইছড়ি আর্মি চেকপোস্টের পথ আটকায় একজন আর্মি। আমার জানা ছিলোনা এখানে চেক ইন করতে হয় প্রতিটা পর্যটককে। আমাকে সাইকেল থেকে নেমে ছাউনিতে বসে থাকা আর্মি অফিসারের নিকট যেতে বললেন। আমি পাশে সাইকেল রেখে সেখানে গেলে আমাকে সালাম দিয়ে আর্মি অফিসার জিজ্ঞেস করলেন বিস্তারিত। নাম,ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার বললে এন্ট্রি করে জানালেন, যেভাবেই হোক আপনাকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে আমাদের এই চেকপোস্ট পার হতে হবে। আমি বললাম, আগামীকাল আমি যাবো ইনশাআল্লাহ্‌ চেষ্টা করবো সন্ধার মদ্ধে চেক আউট করতে। পাশের একজন আর্মি জিজ্ঞেস করলেন, এখনো তো শুরু হয়নি পাহাড়। সামনে তো বিশাল পাহাড় আছে। সেগুলো তে কি করবেন? সহজ উত্তর দিলাম, ইনশাআল্লাহ্‌ চালিয়েই উঠবো। তিনি আমাকে সাহস দিয়ে বললেন, সত্যিই সাহস থাকলে সবই সম্ভব। তিনি থাম্বস আপ দিয়ে আমাকে বিদায় জানালেন। আশাপাশের অনেক পর্যটক তখন অপেক্ষমান চেকইন করতে। তারা আমাকে উৎসাহিত করলেন আর্মির সাথে সাথেই।

এই চেকপোস্টে পার করে কিছুদুর আসলেই আমার পানি শেষ হয়ে যায়। তখনই একটি পুলিশ চেকপোস্ট পাই। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যাবহারে আমি মুগ্ধ। আমি পানি চাইলে পাশের একজন লোককে ডেকে বললেন, উনাকে ঠান্ডা পানি এনে দাও।আমাকে বোতল দুইটা দিতে বললেন। আরেকজন কনস্টেবলকে বললেন, ভাইজান কে ক্যান্টিনে নিয়ে যান। হাল্কা নাস্তা খেয়ে যাক। আমি মানা করে বললাম, এখান চা,নাস্তা খেলে চালাতে সমস্যা হবে। ইনশাআল্লাহ্‌ অন্য সময় আপ্যায়ন নিবো। সালাম করে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।
এর পর তো শুরু হইলো সবুজের সৌন্দর্য্য কাকে বলে। যেমন পাহাড় আর সেখানের সবুজ প্রকৃতি আমাকে খুবই মুগ্ধ করেছে যে ইচ্ছে করে এই পথে সারাদিন প্যাডেলিং করি।
যেতে যেতে অনেক পাহাড়ির সাথে হাই/হ্যালো চললো। 😀

সেদিন ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা আমাকে নয় শুধু, সেই পথের সকল চাঁদের গাড়ির যাত্রি/পর্যটকদের অস্থির করে দিয়েছিল। রোদের তাপে মাথায় গামছা বেঁধে নিলাম, যেন তাপ টা কম লাগে। গামছা টামছা কি আর রৌদ্র মানে? আবাস্থা আমার পুরাই খারাপ করে দিছে সেই খর তাপ। :/

এমন অস্থির করেছে কোন এক অজানা জায়গায় একটি বাঁশের তৈরি একটি স্কুল ঘরে কয়েকটা পিচ্ছিদের দেখে থামলাম। তারা সাজেকে যাওয়ার সময় এবং ফেরার সময় গাড়িগুলো থেকে চকলেট এর আশায় রাআস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলো। তখন প্রায় সড়ে ১০ টা। শরর টা এতোই খারাপ লাগতেছে যে বাহিরে সাইকেল টা রেখেই বেঞ্চে শুয়ে গেলাম। সেখানে প্রায় ১ ঘন্টা ঘুমিয়ে নিলাম।
মাসালং বাজার এর প্রায় ৫ কিলোমিটার আগেই তাড়াহুড়ো করে চলেছি যেনো জুমার জামাত টা ধরতে পারি মাসালং বাজারে। কিন্তু এতেই আমি আরো টায়ার্ড হয়ে যাই। সামান্য এগিইয়ে  একটা দোকান পেলাম ব্রিজের আগে বাম পাশে। দোকানদার পাহাড়ি আমাকে সমাদর করলেন ভালোই। ঠান্ডা পানি এনে দিলো তার স্ত্রী। কলা খেলাম ৮ টা মাত্র ৪ টাকায়। :O বিস্কুট খেলাম ৪ প্যাকেট। 😀
বাকি ৭ টা কলা দোকানী আমাকে ফ্রি দিয়ে দিলেন। অবাক হয়ে গেলাম, যেই কলা ঢাকায় ফ্রি তো দুরের কথা, হালি ৮/১০ টাকা করে কিনি সেই কলা সেখানে… :O

সেখান থেকে উঠেই পথ ধরলাম মাসালং বাজারের। কিন্তু সময় মত না পৌঁছাতে পেরে জুমার নামাজের জামাত টা ছুটে গেলে আর পড়াই হলো না। 🙁

মাসালং বাজারে ডাম দেখে লোভ সামলাতে না পেরে থামলাম। মাত্র ২০ টাকা শুনেই বললাম দেন। মনে মনে কই,৪/৫ টা খাইয়া তারপর যামু। কিসের কির এ ভাই? একটা ডাম কাইট্টা মুখে দিয়েই বুঝলাম ২০ টা টাকাই লস।!!!! :/

যাক, ভর দুপুর এখন। পেট ও ভর্তি আছে। এবার শুরু হচ্ছে ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। এই মাসালং বাজার থেকেই সকল পরিশ্রম শুরু হচ্ছে মাথায় সেটা রেখেছি। স্থানীয়দের মতামত ও ছিল তেমন। কি যে রোদ ছিল তখন তা মাথায় প্রেশার না নিয়ে স্থির রেখেছি ব্রেইন।
এগোতে থাকলাম সামনের দিকে।
এবার আপহীল যা শুরু হইছে তাতে আমি চরম আনন্দিত। কিন্তু সামান্য খাঁড়া আপহীলের পরেই ক্যান এমন খাঁড়া ডাউনহীল থাকতে হবে??? :O

কিছু জায়গায় মেজাজ টা গরম হয়ে গেছে, এতো কষ্ট করে উঠলাম আবার চোখের পলকে নেমে গেলাম। ঠিক কিছু দূর এগোনোর পরেই আমার পানি শেষ। সামান্য কিছু ছিল যা, তাও হাইড্রোলিক ব্রেকের ডিস্কে ঢেলে দিলাম ডিস্ক কে ঠান্ডা রাখতে।
খুব বিপদজনক একটা বাঁক আর খাঁড়া আপহীলে একটা চাঁদের গাড়ি এসে থামলো আমাকে সামনে দেখেই। অবশ্য তারা ভালো পিক আপ দিয়ে উঠার জন্যই থেমেছিলো। আমার পানি নেই দেখে সেই চাঁদের গাড়ির যাত্রিদের একজন আমাকে পানি দিলেন। 🙂

তখন সময় প্রায় ৩ টা।লাস্ট একটা ব্রিজ পেলাম যেখানে অনেক ছেলেরা আডদা দিচ্ছে, বন্ধুদের নিয়ে মজা করছে। দেখেই বুঝলাম তারা পর্যটক। আমার দিকে এক নাগাড়ে তাকিয়ে ছিল ততক্ষন পর্যন্ত যতক্ষন পর্যন্ত আমি ব্রিজের পরের আপহীল শুরু করে যতটুকু চোখে দেখা যায় ততটুকু। মূলত তারা উৎসুক ছিল আমি চালিয়ে উঠছি নাকি নেমে সাইকেল ঠেলে উঠাচ্ছি। 😛

এই জায়গাটা ছিল সাড়ে ৩ কিলোমিটারের শুরু সাজেক পর্যন্ত।
অতএব, এখন আর কোন ডাউনহীল তো নেই ই বরং কোন সমান্তরাল রাস্তা ও নেই। একটা মোড়ের পাশে উপজাতির বাড়ি পেলাম। সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করলাম ২ বোতল। আরো কিছুদুর আগিয়ে আসলে অন্য মোড়ে দোকান পেলাম সামান্য রেস্ট নেওয়া জন্য। এটা রুইলুই পাড়ার কিছু আগেই। সেখানে এসে নিজের শরীরের দিকে তাকাইয়ে দেখি, আর চলছেনা মনে হয়। অথচ এখনো বাকি ২ কিলোমিটার পথ। আশেপাশের দুই/তিনজন স্থানীয় অবাক চোখে তাকিয়ে বললেন, আর তো যেতে পারবেন না। এটা অনেক খাঁড়া পাহাড়। উত্তর দিলাম, দখি কি করা যায়। সামনে এগোতে থাকি।
হঠাৎ জিদ করে দাঁড়িয়ে যেয়ে প্যাডেলিং শুরু করলাম। ৩০০ মিটার এগোতেই একটা বাঁকে এসে দাড়ালাম পেছনের চাঁদের গাড়ি দেখে। বাঁক টা রিস্কি ছিল। চাঁদের গাড়ির যাত্রিরা আমাকে বললেন, না পারলে উঠে যান ভাইয়া। আমি টায়ার্ড অবস্থায় উনাদেরকে হাতের ইশারায় চলে যেতে বললাম। এবার ও জিদ করে প্যাডেলিং শুরু সামনে এগোতেই আবার টায়ার্ড আমি। একটা চাঁদের গাড়িকে দেখাল্মা, আমাকে দেখে হেল্পার সেই রকম একটা ভেটকি দিলো। সাথে সেই গাড়ির যাত্রি রা ও। 😀
এবার প্যাডেলিং শুরু করতে যেয়েই পেছন থেকে একটা চাঁদের গাড়িকে সাইড দিয়েই দেখাল্ম সেই গাড়িতে “চাকা ওলা” গ্রুপে সদস্য রা আছেন। আমাকে দেখে অবাক হয়ে এগোতে থাকেন বলে চলে গেলো।
এখন মাত্র দেখা পেলাম একটা সাইনবোর্ডের, যেখানে লেখা আছে স্বাগতম রুইলুই পাড়া , সাজেক। সেখানে একটা টোল আদায়ের গেট ও ছিলো।
দেখেই কিছুটা শান্তি পাইলাম।

কিন্তু এই শান্তি টা স্থায়ী হয়নি বেশীক্ষণ। কারণ, আপহীল এখনো ১ কিলোমিটার বাকি। :/

যাক, অবশেষে এখানে থেমে ৩ টা কলা আর এক প্যাকেট বিস্কুট শেষ করে শুরু করলাম যাত্রা।
এবার আর থামাথামি নেই। কারণ এটা তেমন খাঁড়া না। এক টানেই চলে যাওয়া যাবে আশা করি। সেটাই করলাম। সাজেক রিসোর্টের দেখা পেলাম। ততক্ষণে অন্ধকার নেমে আসতেছে। টোলের পয়েন্টে আমাকে থামতে বলে ২০ টাকা চাইলো। একজন আর্মি এসে বললেন, থাক থাক, আপনি চলে যান। ততক্ষণে আমি টাকা বের করায় দিয়ে বললাম, থাক না। আমি তো ঘুরতেই এসেছি। নিয়েই নিন। পে করে সামনে এগটেই দুই পাশের পাহড় আর মেঘের হাতছানি আমার সব ক্লান্তি শেষ করে দিলো।
রুনময় রিসোর্টের কাছে দেখলাম সেই “চাকা ওলা” গ্রুপের ১১/১২ জন সদস্য আমাকে ওয়েলকাম জানাতে দাঁড়িয়ে আছেন। সবার হাতে ক্যামেরা ছিল যা, আমার ছবি উঠাচ্ছেন অনেকেই। সবাই হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালেন। ঠিক এই মুহুর্তে আমি ভীষণ ইমোশনাল হয়ে গেলেও উনাদের বুঝতে দেইনি। উনারা আমাকে অনেক সম্মান করলেন যা আমি সত্যিই আশা করিনি। 🙁
আশে পাশে তখন অনেক পর্যটকের ভীড় ছিল। যারা সবাই আজকে আমাকে পুরো পথে আসতে দেখেছেন সাইকেলে। সবাই চাকা অলা দের সাথে যোদ দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 🙂
যেহেতু সন্ধ্যা হয়েই যাচ্ছে, আমি উনাদের বলে আসলাম সাজেক জিরো পয়েন্ট এ একটা চেকইন+ছবি তুলে আসি।
ছবি তুলতে এসে তো সেই মহা কান্ড। অনেক পর্যটক আমার সাথে ছবি তুলেছেন, এবং আমাকে ছবি তুলে দিয়েছেন তাদের মোবাইলে। কারণ, আমার মোবাইলে অন্ধকারে বেশি কালো আসতেছিল। 😛

যাই হোক, অসাধারণ মাউন্টেইন বাকিং ডে শেষ করে আসলাম আজকে। এখন তো তেমন টায়ার্ড লাগছেনা। 😀

চাকা অলা সদস্যারা উনাদের সাথে রুমে উঠতে বললেন। কিন্তু নিজেই আলাদা রুম ভাড়া নিয়েছিলাম ৩০০ টাকায় এক উপজাতির বাসায়।
সন্ধার পরে অনেক নিচে গেলাম ঝর্নার পানিতে গোসল করতে। সেখানে আরো ২ জন পর্যটক ছিল চিটাগাং এর যারা নেকেড গসল করতেছেন। আমকে বললেন, কাজ সেরে ফেলান। কেউ দেখবেনা। আমিও আর কি করুম??? গোসল সেরে ফেলেছি ঐভাবেই। 😛

রাতের খাবার এবং সকালের নাস্তা একসাথে করতে আমন্ত্রন জানালেন চাকা অলা গ্রুপ। 🙂

সাইকেলে সাজেকে যাওয়া এবং আসার প্ল্যান করেই বের হয়েছিলাম। কিন্তু সেদিনের প্রচন্ড খর-তাপ এর কারণে এবং মাঝে ৪ মাসের সাইক্লিং গ্যাপ এর কারণে আমার ব্যাক পেইন উঠে যায় সাজেক পৌঁছাতে পৌঁছাতে। :/
ইচ্ছা থাকলেও পরের দিন আর সাইকেলে ব্যাক করতে পারছিনা। যদিও আসার সময়ের চেয়ে অর্ধেক কম সময়েই খাগড়াছড়ি পৌছানো যেতো সাইকেলে। কারণ, সেই পথে ম্যাক্সিমাম ডাউনহিল ছিল।
সকালে যখন যাবার সময় হয়েছিলো তখন সাজেকে রাত্রি যাপন করা ৪ টা যুগলকে দেখলাম একটা চাঁদের গাড়িতে খাগড়াছড়ি ব্যাক করবেন সকাল সাড়ে ৯ টায়। তাদের থেকে লিফট চাইলে আমাকে সাদরে গ্রহণ করেন। ছাদের গাড়ির ছাঁদে সাইকেল বেঁধে এবং উনাদের সাথে নিছে বসে সেদিন পৌছাই খাগড়াছড়ি। না হলে আমার খবরই ছিল। 😛
আমি বরাবরই কৃতজ্ঞ তাদের কাছে। 🙂
আপনাদের ধন্যবাদ Mahmud Shaikat ভাই-ভাবী, Khayrul Hasan ভাই-ভাবী, Rafik Rubel ভাই-ভাবী, Mohammad Enamul Hoque ভাই-ভাবী। ^_^

উনাদের সাথে খাগড়াছড়ি ফিরেছি দুপুর সাড়ে ১২ টায়। চলে আসলাম ঢাকাগামী বাসের কাউন্তারে। যাওয়ার ব্যাবস্থা তো করতে হবে এখন। সকল বাসে ট্রাই করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় আবার গেলাম শান্তি পরবহনের কাউন্টারে। কাউন্টার ম্যান কে বললাম দেখেন না কোন ব্যাবস্থা করা যায় কিনা। ঠি এই মুহুর্তে, আমার পেছনে এক লোক এসে কাউন্টার ম্যানকে বললেন, ডিসি সাহেবের দুইটা টিকেট বুকিং ছিলো রাত ৯ টার গাড়িতে। একটা কনফার্ম করবেন আর একটা ক্যান্সেল করবেন।
এটা শুনেই আমার চোখ কপালে উঠলো। 😀
কাউন্টার ম্যানকে বললাম, দাদা আমাকে দেওয়া যায় সেই টিকেট টা? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ দেওয়া যাবে। একটু অপেক্ষা করেন।
এইটাকেই বলে কপাল আর কি!!!! 😀 যাক রাত ৯ টার গাড়ি কনফার্ম করলাম। শিট ও পাইলাম ভালো। B3 B|

শুনেছিলাম খাগড়াছড়ির আলু টিলায় নাকি একটা প্রাচীন গুহা আছে। যেখানে ভেতরে দারুন একটি ঝর্ণা ও রয়েছে। লোভ সামলাতে না পেরে সাজেক থেকে ফিরেই সেখানে চলে গেলাম। খুবই রোমাঞ্চকর একটা বিকেল কাটিয়ে আসলাম আলুটিলা থেকে।


রাত ৮ টায় কাউন্টারের সামনে চাকা অলা গ্রুপের সদস্যাদের সাথে আবার দেখা হয়। তারাও শান্তি পরবহনে রাত ৯ টার ভিন্ন গাড়িতে ঢাকায় যাবেন।
উনাদের সাথে শেষ বিদায় নিয়ে রাত ৯ টার গাড়িতে রওনা হয়ে ভোর ৪ টায় বাসায় এসে পৌছালাম। 🙂

শোকরিয়া মহান আল্লাহ্‌র নিকট, তিনি আমাকে এমন একটি অপরূপা গ্রীন ভ্যালী তে সাইকেলে ভ্রমণ করার তৌফিক দিয়েছেন।

#হ্যাপি_ট্রাভেলিং
#হ্যাপি_সাইক্লিং

সকল ফটোর এ্যালবাম এখানে

ফেসবুকে লাইফ ইভেন্ট এখানে

এন্ডোমন্ডো ট্র্যাকিং লিঙ্কগুলো এখানেঃ খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক এবং আলূ টিলা

Spread the love

Leave a Comment