Personal Blog | Travel | Tech

প্রথম বাংলাদেশীর দুই চাকায় সিকিম ভ্রমণ (নারায়নগঞ্জ – গ্যাংটক – নারায়নগঞ্জ)

দুই চাকায় নারায়ানগঞ্জ থেকে গ্যাংটক!!!
সর্বমোট দুরত্ব ড্রাইভ করি ১২১৮ কিলোমিটার।
হ্যা, আমার দুই চাকার দুই বাহনে ভারতের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন রাজ্য সিক্কিম ভ্রমন করে এলাম। ঘুরে এলাম গ্যাংটক দুই চাকার বাহনে।
পরিকল্পনাটি ছিল ভিন্ন। দেশের সাইক্লিং ও মোটরসাইকেল কমিউনিটিতে আজ পর্যন্ত কেউই এমন প্ল্যানে রাস্তায় বের হয়নি। তাই নিজেই সুযোগ টা কাজে লাগাই ঈদের পরের ফাঁকা রাস্তায়।

সিকিমের রাজধানীতে আমি এবং আমার বাইসাইকেল

আলহামদুলিল্লাহ্‌, প্রতিটা দিন প্ল্যান অনুযায়ী পুরোপুরি শেষ করতে না পারলেও এক দিনের পিছিয়ে পড়া প্ল্যান অন্য দিনের বেশি দুরত্ব পাড়ি দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাই। মোট প্ল্যানের একদিন আগেই ফিরে আসি বাসায়।

Motorbike Ride in Jamuna Bridge | Hero Hunk | Sikkim Tour

প্রথম দিন মোটরসাইকেলে নারায়ানগঞ্জ থেকে রংপুর। বাইসাইকেল টি প্যাক করে মোটরসাইকেলে ক্যারি করি নিজেই। রংপুর শহরের হোটেল তিলোত্তমা ইন্টাঃ এ রাতে থাকি।

হোটেল তিলোত্তমা ইন্টাঃ রংপুর থেকে বের হওয়ার সময়

দ্বিতীয় দিন রংপুর থেকে বাংলাবান্ধা পৌছে মোটরসাইকেলে ছবি উঠাই এবং ফিরে আসি তেতুলিয়া বাজারে। এখানে একজন সিনিয়র বসের এক্স কলিগের বাসায় মোটরসাইকেল রেখে বাইসাইকেল এসেম্বেল করে বর্ডার পাড়ি দিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছে রাতে থাকি গানানায়কে।

তেতুলিয়াতে আমার দু চাকার দুইটি বাহন

এই ট্যুরের বর্ডার ক্রস করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ভিডিও আকারে উল্লেখ করা আছে এই ভিডিওতে
তৃতীয়দিন শিলিগুড়ি থেকে বাইসাইকেলে সেভকি, তিস্তা হয়ে রোঙ্গপো (সিক্কিম বর্ডার) তে থাকি। এদিন বিকেলে পৌছেই Inner Line Permit এর জন্য আবেদন করি Foreigners Reporting Office এ। এখানে বাংলাদেশীদের লাইন টা মোটামুটি দির্ঘ ছিল। কিন্তু একা আসাতেও কোন সমস্যা হয়নি পার্মিট পেতে।

রোংপো হতে রাইড শুরু সময়

চতুর্থ দিন রাঙ্গপো থেকে খাঁড়া পাহাড় সাইকেলে বেয়ে উঠতে অনেক কষ্ট হলেও ঠিক সন্ধায় পৌঁছে যাই গ্যাংটক জিরো পয়েন্ট এ। হোটেল হান্ড্রেড প্যাটেলস এ উঠি বিশেষ অথিতেয়তায়। শুধু মাত্র বাইসাইকেলে আসার কারণে থ্রি স্টার মানের এই হোটেলে পাই বিশেষ সুবিধা। কারণ, এই হোটেলের মালিক ছিলো আমার পূর্ব পরিচিত।

হোটেল হান্ড্রেড প্যাটেলস থেকে বিদায় বেলায়

মূল টার্গেটে পৌঁছে যাওয়ায় বিলম্ব করিনি এখানে।
পঞ্চমদিন সকালে জীপের ছাঁদে সাইকেল উঠিয়ে জনপ্রতি ২৫০ রুপী ও সাইকেল ২০০ রুপীতে ব্যাক করি শিলিগুড়িতে। বিকেল থেকে সন্ধায় শপিং এর জন্য ঘোরাঘুরি করে আবার একই হোটেলে ফিরে ঘুমিয়ে যাই।

শিলিগুড়িতে ফিরে শপিং এ বের হওয়ার মুহুর্তে

ষষ্টদিন সকালে শিলিগুড়ি থেকে সাইকেলে বর্ডারে আসলে ১ ঘন্টা বিলম্ব হয় ইমিগ্রেশনে। তেতুলিয়া ফিরে সাইকেল প্যাক করে মোটরসাইকেলে তুলে রওনা হই ঢাকার পথে।

ফুলবাড়ি বর্ডারের কাছাকাছি আমার শপিং বোঝাই বাইসাইকেলটি

আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভোর ৪টায় বাসায় পৌঁছাই ৪৮৫ কিলোমিটার মোটরসাইকেল রাইড শেষে…
তবে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে ফেরার সময় সাভারে। যার বিবরণ আছে এই এলবামের একটি ছবিতে।
দূর্ঘটনার ভিডিওটি দেখতে পাবেন এখানে ক্লিক করে
ট্যুরের শুরু থেকে শেষ খুবই থ্রিলিং ছিল। ভয় ছিলো মোটরসাইকেল রাইড ও বর্ডারের ওপারের পাহাড়ি রাস্তা নিয়ে। কিন্তু সব কাটিয়ে শেষ হাসিটা হেসেছিলাম বাসায় ফিরে নিজের ১৯ মাসের কন্যাকে কোলে তুলে নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ্‌

ফেরার পথে দেবীগঞ্জের কোথাও ছবিটি তোলা

এই ট্যুরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল ছবি এই এলবামে রয়েছে। প্রতিটা ছবিতা আলাদা আলাদা ক্যাপশন আছে। প্রয়োজনে পড়ে নিবেন। ধন্যবাদ
বাইসাইকেল জিপিএস ট্র্যাকিং লিংকসমূহ এখানেঃ
তেতুলিয়া – শিলিগুড়ি | শিলিগুড়ি – রাঙ্গপো (ইস্ট সিক্কিম) | রাঙ্গপো – গ্যাংটক  | শিলিগুড়ি – তেতুলিয়া
ফটো এ্যালবাম লিংক
এই ট্যুরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল ছবি এই এলবামে রয়েছে। প্রতিটা ছবিতা আলাদা আলাদা ক্যাপশন আছে। প্রয়োজনে পড়ে নিবেন।
ধন্যবাদ

Spread the love

Leave a Comment